সংক্ষিপ্ত হজ গাইড: হজের কিছু বিশেষ স্থান ও পরিভাষা
হারাম শরীফ
পবিত্র কাবাঘরের চারপাশের বিশাল মসজিদকে বলা হয়- মাসজিদুল হারাম, মসজিদে হারাম বা হেরেম শরিফ।
তাওয়াফ
তাওয়াফ অর্থ প্রদক্ষিণ করা। হাজরে আসওয়াদের কোণ থেকে সর্বদা বাম হাত কাবাঘরের দিকে রেখে এই তাওয়াফ করতে হয়।
সায়ি
সায়ি অর্থ হাঁটা ও দৌড়ানোর মাঝামাঝি অবস্থায় দ্রুতপদে হেঁটে চলা। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাতবার দ্রুতপদে অতিক্রম করাকে সায়ি বলে।
রমল
রমল শব্দের অর্থ হলো হাঁটা ও দৌড়ানোর মাঝামাঝি অবস্থায় বীর দর্পে চলা।যেসব তাওয়াফের পর সায়ি করতে হয় সেসব তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে বীরবিক্রমে কাঁধ হেলিয়ে সজোরে ঘন ঘন পা ফেলে দ্রুতপদে চলাকে ‘রমল’ বলে।
মাকামে ইবরাহিম
কাবাঘরের পূর্বদিকে হজরত ইবরাহিমের (আ.) পদচিহ্ন সংবলিত একটি পাথর কাচের বেড়ির মধ্যে রাখা আছে। এই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে হজরত ইবরাহিম (আ.) কাবাঘর নির্মাণ করেছিলেন। এই রক্ষিত পাথরের আশপাশই মাকামে ইবরাহিম নামে পরিচিত।
হাতিম
কাবা শরিফ সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিমদিকে অর্ধবৃত্তাকার দেয়ালঘেরা জায়গাকে ‘হাতিম’ বলে।
মিজাবে রহমত
মিজাব আরবি শব্দ। মিজাব অর্থ হলো নল। হাতিমের মধ্যে একটি পাথরের ওপর পবিত্র কাবাঘরের ছাদের পানি পড়ার জন্য যে স্বর্ণের নল আছে, সেই নলটিকেই মিজাবে রহমত বলে। কখনও বৃষ্টি হলে এই বরকতময় পানি সংগ্রহের জন্য ভিড় জমে যায়।
মুলতাজিম
পবিত্র কাবাঘরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একখণ্ড বেহেশতি পাথর লাগানো আছে। এখান থেকে কাবাঘরের দরজা পর্যন্ত দেয়ালের অংশটিকে মুলতাজিম বলে।
জামরাত
মিনায় শয়তানকে পাথর মারার জন্য নির্ধারিত স্থান। এখানে হাজিদের নিয়মমতো শয়তানকে পাথর মারতে হয়।
রমি
রমি শব্দের অর্থ ছোড়া বা নিক্ষেপ করা। মিনায় শয়তানকে পাথর মারাকে রমি বলে।
দম
ইহরাম অবস্থায় কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি বা নিষিদ্ধ কোনো কাজ করে ফেললে তার ক্ষতিপূরণস্বরূপ যে কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব হয়ে যায়- তাকে ‘দম’ বলে।
মিকাত
পবিত্র ভূমি মক্কা শরিফে প্রবেশের জন্য চতুর্দিকে নির্দিষ্ট দূরত্বে বিশেষ জায়গাকে সীমারেখা করে পোস্ট বা খুঁটি পুঁতে রাখা আছে। এদের মিকাত বলে। হজ ও ওমরাহকারীদের এই স্থান অতিক্রম করার আগেই ইহরাম বাঁধতে হবে।
কাবার প্রতিটি কোণার নাম
পবিত্র কাবাঘর একটি কিউব আকৃতির হওয়ায় চারটি কোণ রয়েছে। এর অর্থ হল বিখ্যাত রুকন ইয়ামানি ছাড়াও পবিত্র কাবাঘরের অবশিষ্ট তিনটি কোণ – রুকন ইরাকি, রুকন শামি এবং রুকন আল আসওয়াদ – ইসলামে তাদের নিজস্ব তাৎপর্য রয়েছে। চারটি কোণ মোটামুটিভাবে কম্পাসের মূল দিকগুলির দিকে নির্দেশ করে; উত্তর, পশ্চিম, দক্ষিণ এবং পূর্ব। তাছাড়া, রুকন আল আসওয়াদ ব্যতীত, তারা যে দেশের দিকে ইঙ্গিত করে তার উপর ভিত্তি করে সমস্ত কোণার নাম তাদের দেওয়া হয়েছে।
রুকন আল আসওয়াদ / হজরে আসওয়াদ
পবিত্র কাবাঘরের যে কোণে হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) অবস্থিত তাকে রুকন আল আসওয়াদ বলা হয়। কোণটি পবিত্র কাবাঘরের কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের দিকে নির্দেশ করে।
রুকন ইয়ামানি
পবিত্র কাবাঘরের যে কোণটি ইয়েমেনের মুখোমুখি হয় তাকে রুকন ইয়ামানি (ইয়েমেনি কোণ) বলা হয়। এটি কাবাঘরের একমাত্র কোণ যা কিসওয়া দ্বারা আবৃত নয়। রুকন ইয়ামানিতে ইস্তিলাম করা সুন্নত বলে গণ্য। অতএব, হজ বা ওমরাহ করার সময়, মুসলমানরা তাওয়াফ (প্রদক্ষিণ) শেষ করার পরে ইস্তিলাম করার মনস্থ করে।
রুকন ইরাকী
রুকন ইরাকি পবিত্র কাবাঘরের কেন্দ্র থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে সামান্য নির্দেশ করে। এটিকে ইরাকি কর্নারও বলা হয় কারণ এটি ইরাকের ভূমির মুখোমুখি।
রুকন শামী
রুকন শামি, লেভানটাইন কর্নার নামেও পরিচিত, পবিত্র কাবাঘরের কেন্দ্র থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে নির্দেশ করে। সিরিয়ার দিকে নির্দেশ করায় কর্নারটির নামকরণ করা হয়েছে রুকন শামি।