মুসলিম স্থাপত্যের অনুপম নিদর্শন মসজিদে নববী। মসজিদে নববী মানে নবীর (স.) মসজিদ। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) মদিনা শরিফে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। পৃথিবীতে ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ যেসব স্থান রয়েছে তার একটি মসজিদে নববী। আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদের পক্ষে মানুষকে আহ্বান করার সময় যখন মক্কার কাফের-মুশরিকদের অত্যাচার-নির্যাতন সীমাহীন পর্যায়ে চলে যায় ঠিক তখনি আল্লাহর নির্দেশে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরত করেন । পবিত্র কাবা শরিফ তথা মসজিদে হারামের পরেই মদিনা মসজিদের অবস্থান। মহানবীর হিজরতের আগ পর্যন্ত মদিনার নাম ছিল ইয়াসরিব। মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) ইয়াসরিবের নাম পাল্টে রাখেন মদিনা। হিজরতের পর মুসলমানদের নামাজের জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) কর্তৃক নির্মিত হয় মদিনা মসজিদ। ৬২২ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরের পর থেকে শুরু হয়ে ৬২৩ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মদিনা মসজিদের নির্মাণ কাল নির্ধারণ করা হয়।
নির্মাণপ্রক্রিয়া
মদিনায় প্রবেশের পর রাসুল (স.)-এর উটনি ‘কাসওয়া’ যে স্থানটিতে বসে পড়েছিল, সেই স্থানেই তৈরি করা হয় ঐতিহাসিক মসজিদে নববী। হুজুর (সা:) মদিনা মসজিদের নির্মাণের জন্য নাজ্জার গোত্রের সাহল ও সোহাইল নামক দুইজন এতিম বালকের নিকট থেকে ১০ দিনারের বিনিময়ে জমি ক্রয় করেন। জমির ক্ষুদ্র একটি অংশে বাসস্থান নির্মাণ করতঃ বাকী অংশে মসজিদ তৈরি করা করেন। মদিনায় হিজরত করে সর্বপ্রথম তিনি মসজিদ নির্মাণের প্রতি গুরুত্ব দেন।
মসজিদে নববীর বিশেষ ফজিলত
হাদিস শরীফে মসজিদে নববীর অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে । নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মসজিদে নববিতে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মসজিদে হারাম ছাড়া পৃথিবীর যেকোনো মসজিদে এক হাজার ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের চেয়েও উত্তম।’ (বুখারি: ১১৯০; মুসলিম: ১৩৯৪)
নবীজির জীবদ্দশা এবং খুলাফায়ে রাশেদীনের সময়কাল পর্যন্ত মসজিদে নববীই ছিল তৎকালীন মুসলমানদের মূলকেন্দ্র। এখান থেকেই পরিচালিত হতো মুসলিম বিশ্ব। ইতিহাস-ঐতিহ্য, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যতা সবদিক থেকেই মুসলমানদের কাছে মসজিদে নবীর গুরুত্ব অপরিসীম।